Skip to main content

"জানালায় সোনালি রোদ্দুর : এক "

এক দীর্ঘসময় পর আমি আমার প্রিয় বিছানায় শুয়েছি।আমার প্রিয় পড়ার টেবিলে বসতে পেরেছি।আমার দীর্ঘ দিনের প্রিয় টেবিল, আমার সাথেই ছিল - আমার বড় হওয়ার সময়গুলোতে, অবুঝ বয়ঃসন্ধিকালে, হাফপ্যান্ট পড়ে হাইস্কুলে যাওয়ার বছরগুলোতে।আমার প্রিয় বিছানায় শুয়ে আমি প্রতিদিন প্রিয়দের কল্পনা করতাম; যা ঐ বয়সটাতে একেবারে স্বাভাবিক ছিল। পড়ার টেবিলে বই সাজাতাম, অনেক গুলো গল্পের বই ছিল, যা পড়ার টেবিলে রাখা বারণ ছিল। আমার একটা কালো রংয়ের ডায়রি ছিল, সেখানে আমার ব্যাক্তিগত গল্প কবিতা থাকত, আমার না বলা কথা,জানি সেটা কখনোই এনা ফ্রান্ঙের ডায়রি হয়ে উঠবে না, তবুও ওটা আমার কাছে তার চেয়েও মূল্যবান। অনেক রাত অবধি পড়াশোনার অভ্যাস ছিল। বিশেষ করে পরীক্ষা র আগমুহূর্ত গুলোতে।শেষরাতে কোনো একটা পাখির ডাক আমাকে রাতপোহাবার জানান দিত।পশ্চিমে একটা জানালা ছিল। শেষরাতে চাঁদ ডুবে যাওয়ার দৃশ্যটা ওই বয়সে আমার জন্য পরম আকাঙ্খার ছিল। যে চাদে প্রিয়তমার মুখ দেখতাম,আর এর সাথেই প্রিয় হয়ে গিয়েছিল জীবনানন্দ দাশ।যে চাদের সৌন্দর্য আর নির্জনতা উপভোগ করতে শিখিয়েছিল সেই বালকবেলায়। যা আমার পুরোটা জুড়ে এখনও অধিকার করে আছে। শীতকালে যখন লেপকাথা জুড়ে পরণকথার গন্ধ থাকত আর স্বপ্ন দেখতে দেখতে ঘুমিয়ে পড়তাম। সে সপ্ন আমাকে হাত ধরে অনেকদুর নিয়ে গেছে। সেখান থেকে পালাবার বা পিছু হটবার আর কোনো পথ নেই!

Comments

Popular posts from this blog

দীর্ঘশ্বাস -নদীর ধারে।

আমাদের ভেতরে জেগে থাকে একটা দীর্ঘশ্বাস  হৃদয় ঘুমায়ে যায়,জেগে থাকে আমাদের মন কত দিন পরে, কোনো এক শান্ত শীত ভোরে দূর থেকে ভেসে আসে খেজুর পাতার ঘ্রাণ  রংয়ের আকাশে ভেসে মেঘ একটুকু বয়ে নেওয়া রঙিন আবেগ। আমরা ভাবতে থাকি টিনের চালের নিচে শুয়ে কত বাস ট্রাম চলে,আর কত দূর দৌড়ালে  আমাদের কাছে এসে সময় ক্ষমা চেয়ে নেবে আর কত গল্প বলে,কত সব কবিতা লেখা হলে মানুষ ভেবে নেবে সফল জীবন কত দিন, কত সন্ধ্যা পাখির ডাকের থেকে আকাশ দেখে,নিরবে নদীর পারে নদীর ঢেউয়ের সাথে কত কথা বলা হলে পরে আমাদের বন্ধু হবে,আমরা হবো বন্ধু নদী কিংবা ঘাসের  কত দিন কথা হয় ওই নীল পাখিদের সাথে।

চতুরঙ্গ : একটি চৌমুখী পর্যালোচনা!

চতুরঙ্গ উপন্যাসের মূল চরিত্র চারটি। চারটি বিশেষ কাহিনী একত্রিত করেই, একই সুতোর টানে আবর্তিত হয়েছে শ্রীবিলাসের জবানীতে। তারপরও শচীশ না শ্রীবিলাস কাকে প্রধান চরিত্র বলবো তা নিয়ে দ্বন্ধ থেকেই যায়।  জ্যাঠামশাই জগমোহন এর নাস্তিকতার আড়ালে নির্লোভ জন সেবা করা মানবধর্মের সুন্দর পরিচয় বহন করে। জগমোহন থেকে সে মহান গুন পরিচালিত হয়েছে শ্রীবিলাসের দিকে। তৎকালীন সমাজ ব্যাবস্থায় স্রোতের বিপরীতে চলা এরকম চরিত্র সৃষ্টি করা কখনোই সহজ কাজ ছিলো না।নারীজীবননের নানা দ্বন্দ্ব সংঘাত সুচারুরূপে উঠে এসেছে দামিনীর মধ্যে। দামিনীর ভালোবাসা শচীশ আর শ্রীবিলাসের জীবনে নিয়ে এসেছে শীতলতা।যদিও ভালোবাসার স্রোত সর্বদাই শচীশের দিকেই প্রবাহিত হয়েছে। এমনকি শ্রীবিলাসের সাথে বিবাহের পরও সে শচীশের প্রতি নিবেদিতপ্রান। শচীশের জীবিকার চিন্তাও সেই করেছে।কিন্তু মৃত্যুর পূর্ব মূহুর্তে শেষ আকুতিটুকু শ্রীবিলাসের  প্রতিই ছিলো "সাধ মিটিল না, জন্মান্তরে আবার যেন তোমাকে পাই "। দামিনী শক্তভাবে অবহেলা করে গেছে লীলানন্দস্বামীর ধর্ম, কর্ম, প্রেম আর আধ্যাত্মিকতা।  চারটি চরিত্রকে আলাদাভাবে বর্ননা করেও, তাদের স্বকীয়তা ধরে রেখেছেন সমানভা

জাহাজের পটভূমিতে

সকালের কোলাহল শুরু হতে, শুরুর সূর্যের আলো যেইমাত্র জানালা দিয়ে ঘরে প্রবেশ করে তখন আর কে এলিয়ে থাকে গা বিছানার পরে? অতএব, চমৎকার একটা দিনের শুরু শুরু আরো কিছুকাল উদ্দেশ্যেহীন বেচে থাকা কি করে কাটবে এই নিরাশ সময়,সব এলোমেলো ভেবে। ঘর থেকে বের হয়ে একটি পাখিকে ডেকে যেতে দেখি শুধু গাছের আড়ালে তারপর দিন বেড়ে যায়,মানুষের সব  ক্ষুধা গ্রাস করে মৃত অন্ধকার  দুপুরের নিরবতা সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে যখন সাগরতীরে ভিড়ে যায় পুরোনো জাহাজ নাবিকেরা নেমে পরে বন্দরের কাছে তাদের ও আছে প্রয়োজন আরো কিছুকাল বেচে উপভোগ করা এই সময়ের স্মৃতি  কত দিন কত রাত পরে,ভিড়ে তারা বন্দরের কাছে। বিকেলের আলোতে বসে চায়ের দোকানে সব কথা ভেবে যায় একটি যুবকে সব অন্ধকার কখন নামবে এই পৃথিবীর বুকে, কখন ফিরবে সব পাখিরা নীড়ে,  কখন উঠবে সব তারাদের দল, অন্ধকার ফুড়ে সব শান্ত চারিদিকে, সব কোলাহল শেষে কখন ফিরবে সব ক্লান্ত দেহ বিছানার পরে।