Skip to main content

"শৈশবের স্বপ্নেরা রং খেলা করে "

আমরা আসলে সবচেয়ে বেশি সৌভাগ্যবান, আমরা বেচে আছি!
আমাদের স্বপ্নের সাথে প্রতিনিয়ত আমরা খেলা করি, আমাদের উঠা,বসা, ভালোলাগা, ভালোবাসা সবকিছু জুড়ে আমাদের স্বপ্ন থাকে।আমরা এড়াতে পারিনা আমাদের এই বোধ। তিল তিল করে গড়ে তোলা এই সুখ। আমরা থেকে আমিকে আলাদা করি, আমি হাটতে থাকি, আমার গ্রাম, আমার শহর,আমার সমস্ত জনপদ পিছনে পড়ে থাকে।আমার পরিবার, সংসার, সমাজ, ভালোকাজ সবকিছু  ফেলে স্বপ্নের কাছে ছুটে আসি।আসি আমার প্রানের দেবতার কাছে। বৃষ্টি দেখতে দেখতে আমি হারিয়ে যাই আমার অচেনা শৈশবে। বয়স খুব একটা বেশি হয়নি, এই বয়সেই আমার শৈশবের গল্প করতে ভালো লাগে।


সবকিছু ছেড়ে ভবঘুরের দলে যোগ দেয়া মানুষ আমি। সবার সাথে মিশে হইহুল্লোড় করে বেড়ানো আমার স্বভাবে নেই। আমার শৈশবে নেই।খালের স্রোত ধরে নৌকা চলে গেছে, সবাই দলবেধে সে নৌকায় উঠে গেছে,আমি সমাজ বিছিন্ন, আমি পেছনে পড়ে রয়েছি।দূর থেকে হাত নেড়ে সবাইকে বিদায় জানচ্ছি । সে বিদায়ের দিনক্ষন আমার জানা নেই।

সন্ধ্যাবেলাটা ছোটবেলায় একটা ঘোরের মত লাগত। জীবনে কিছু একটা আছে,কিছু একটা নেই এই ভেবেই হতাশ হতাম।তখন আকাশ আমার সংগী হত।ছোটবেলা থেকেই সেই আমার আকাশের সঙ্গে সখ্যতা।সমাজবিছিন্ন হয়ে সেই তখন থেকেই আকাশচুম্বী স্বপ্ন দেখে যাচ্ছি।

ছোট বড় নানা ধরনের আফসোস নিয়ে আমার শৈশব কেটে গেছে। সাইকেল না থাকার আফসোস,মাঠ দাপিয়ে ফুটবল না খেলতো পারার আফসোস, সবচেয়ে বড় আফসোস ছোট বেলায় হুমায়ূন আজাদের লেখার সাথে পরিচিত হতে না পারা । আমার বেড়ে উঠার সময়গুলোতে হুমায়ূন আজাদ আমার পাশে ছিলেন না। আমার মাথার শিয়রে থাকত জীবনানন্দ দাশের কবিতাসমগ্র।সেই বই সকল রোগের ওষুধ হিসেবে কাজ করত।তারপর বিভুতিভূষন পড়ে,পথের পাচালি পড়ে,শৈশবের কিছু আফসোস ঘোচানো গেছে।

আজ এই বৃষ্টিমুখর দিনে, এতগুলো কথা একনিশ্বা:সে বলে ফেললাম, আমার পাওয়া,না পাওয়া, হারিয়ে যাওয়া স্বপ্নের বয়ান করলাম।এই সব স্বপ্ন যেন, আজন্ম লালিত বোধ, ভালোলাগা, এসবের জন্যই বেচে থাকব আরো কিছুকাল!

Comments

Popular posts from this blog

দীর্ঘশ্বাস -নদীর ধারে।

আমাদের ভেতরে জেগে থাকে একটা দীর্ঘশ্বাস  হৃদয় ঘুমায়ে যায়,জেগে থাকে আমাদের মন কত দিন পরে, কোনো এক শান্ত শীত ভোরে দূর থেকে ভেসে আসে খেজুর পাতার ঘ্রাণ  রংয়ের আকাশে ভেসে মেঘ একটুকু বয়ে নেওয়া রঙিন আবেগ। আমরা ভাবতে থাকি টিনের চালের নিচে শুয়ে কত বাস ট্রাম চলে,আর কত দূর দৌড়ালে  আমাদের কাছে এসে সময় ক্ষমা চেয়ে নেবে আর কত গল্প বলে,কত সব কবিতা লেখা হলে মানুষ ভেবে নেবে সফল জীবন কত দিন, কত সন্ধ্যা পাখির ডাকের থেকে আকাশ দেখে,নিরবে নদীর পারে নদীর ঢেউয়ের সাথে কত কথা বলা হলে পরে আমাদের বন্ধু হবে,আমরা হবো বন্ধু নদী কিংবা ঘাসের  কত দিন কথা হয় ওই নীল পাখিদের সাথে।

চতুরঙ্গ : একটি চৌমুখী পর্যালোচনা!

চতুরঙ্গ উপন্যাসের মূল চরিত্র চারটি। চারটি বিশেষ কাহিনী একত্রিত করেই, একই সুতোর টানে আবর্তিত হয়েছে শ্রীবিলাসের জবানীতে। তারপরও শচীশ না শ্রীবিলাস কাকে প্রধান চরিত্র বলবো তা নিয়ে দ্বন্ধ থেকেই যায়।  জ্যাঠামশাই জগমোহন এর নাস্তিকতার আড়ালে নির্লোভ জন সেবা করা মানবধর্মের সুন্দর পরিচয় বহন করে। জগমোহন থেকে সে মহান গুন পরিচালিত হয়েছে শ্রীবিলাসের দিকে। তৎকালীন সমাজ ব্যাবস্থায় স্রোতের বিপরীতে চলা এরকম চরিত্র সৃষ্টি করা কখনোই সহজ কাজ ছিলো না।নারীজীবননের নানা দ্বন্দ্ব সংঘাত সুচারুরূপে উঠে এসেছে দামিনীর মধ্যে। দামিনীর ভালোবাসা শচীশ আর শ্রীবিলাসের জীবনে নিয়ে এসেছে শীতলতা।যদিও ভালোবাসার স্রোত সর্বদাই শচীশের দিকেই প্রবাহিত হয়েছে। এমনকি শ্রীবিলাসের সাথে বিবাহের পরও সে শচীশের প্রতি নিবেদিতপ্রান। শচীশের জীবিকার চিন্তাও সেই করেছে।কিন্তু মৃত্যুর পূর্ব মূহুর্তে শেষ আকুতিটুকু শ্রীবিলাসের  প্রতিই ছিলো "সাধ মিটিল না, জন্মান্তরে আবার যেন তোমাকে পাই "। দামিনী শক্তভাবে অবহেলা করে গেছে লীলানন্দস্বামীর ধর্ম, কর্ম, প্রেম আর আধ্যাত্মিকতা।  চারটি চরিত্রকে আলাদাভাবে বর্ননা করেও, তাদের স্বকীয়তা ধরে রেখেছেন সমানভা

জাহাজের পটভূমিতে

সকালের কোলাহল শুরু হতে, শুরুর সূর্যের আলো যেইমাত্র জানালা দিয়ে ঘরে প্রবেশ করে তখন আর কে এলিয়ে থাকে গা বিছানার পরে? অতএব, চমৎকার একটা দিনের শুরু শুরু আরো কিছুকাল উদ্দেশ্যেহীন বেচে থাকা কি করে কাটবে এই নিরাশ সময়,সব এলোমেলো ভেবে। ঘর থেকে বের হয়ে একটি পাখিকে ডেকে যেতে দেখি শুধু গাছের আড়ালে তারপর দিন বেড়ে যায়,মানুষের সব  ক্ষুধা গ্রাস করে মৃত অন্ধকার  দুপুরের নিরবতা সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে যখন সাগরতীরে ভিড়ে যায় পুরোনো জাহাজ নাবিকেরা নেমে পরে বন্দরের কাছে তাদের ও আছে প্রয়োজন আরো কিছুকাল বেচে উপভোগ করা এই সময়ের স্মৃতি  কত দিন কত রাত পরে,ভিড়ে তারা বন্দরের কাছে। বিকেলের আলোতে বসে চায়ের দোকানে সব কথা ভেবে যায় একটি যুবকে সব অন্ধকার কখন নামবে এই পৃথিবীর বুকে, কখন ফিরবে সব পাখিরা নীড়ে,  কখন উঠবে সব তারাদের দল, অন্ধকার ফুড়ে সব শান্ত চারিদিকে, সব কোলাহল শেষে কখন ফিরবে সব ক্লান্ত দেহ বিছানার পরে।