Skip to main content

শুভ নববর্ষ ১৪২৭

পহেলা বৈশাখ বাঙালির প্রানের উৎসব। বাঙলা বর্ষের প্রথম দিন, নতুন বছরকে বরণ করে নেয়ার ধুমধাম মহোৎসব। সেই অতীত কাল থেকে চলে আসছে বাংলা বছর বরণ করে নেয়ার উৎসব। আর এখন সেটা হয়ে গেছে গোটা বিশ্বের সব বাঙালির মিলনোৎসব। 

আমাদের ছোটবেলায় আমরা পহেলা বৈশাখ দেখেছি। পালন করেছি, নতুন বছরে সৃষ্টিকর্তার কাছে সুখ সমৃদ্ধি চেয়ে প্রার্থনা করেছি। এদিন পুরো পরিবারের সবার মধ্যে উৎসবমুখর ভাব থাকে। সকাল সকাল সবাই মিলে দই চিরা খাওয়ার মধ্য দিয়ে শুরু। পরিবারের বড়দের প্রণাম করে প্রণামী নেয়া হত খাওয়ার পরে। 

ছোটবেলায় পহেলা বৈশাখে দেখা আরেকটা উৎসব হচ্ছে "আম ভাসানো "। ছোট আমের মুকুল পুকুরে ভাসানো। মানে হিন্দুধর্মীয় দৃষ্টিকোন থেকে মা গঙ্গার কাছে উৎসর্গ করা। এর মধ্যে দিয়ে, যাতে আমের ফলন ভালো হয় তার আশীর্বাদ চাওয়া। 


এরপর এঘর ওঘর ঘুরে সবার কাছে আশীর্বাদ চাওয়া, দুপুরে সবাই একসাথে খাওয়া। এরপর বিকেলে চলে যেতাম বৈশাখী মেলায়। এই এক উৎসব আমার সমগ্র শৈশবকে মাত করে রেখেছে। গ্রামের মাঠে ঘোড়দৌড় দেখে, কতদিন ঘোড়সওয়ার হওয়ার ইচ্ছা লালন করেছি। মেলায় যেয়ে ঘুরতাম, আচার খেতাম, আর আনুষাঙ্গিক ছিলো বড় ডাটওয়ালা বেলুন ও মাটির ঘোড়া কেনা। 

এখন শহুরে মানুষ হয়ে গেছি।পহেলা বৈশাখ করি, রমনায় যাই,কন্ঠ মিলিয়ে " এসো হে বৈশাখ " গাই। কিন্তু সেই হারানো ছোটবেলায়  সরল আমেজটুকু আর পাই না।  সেসব শৈশব এখন ছবি হয়ে গেছে, হাত বাড়ালেও আর ছোয়া যাবে না। 

নতুন বছর সবার জীবনে নিয়ে আসুক, সুখ, সমৃদ্ধি, শান্তি! 

শুভ নববর্ষ ১৪২৭.

Comments

Popular posts from this blog

দীর্ঘশ্বাস -নদীর ধারে।

আমাদের ভেতরে জেগে থাকে একটা দীর্ঘশ্বাস  হৃদয় ঘুমায়ে যায়,জেগে থাকে আমাদের মন কত দিন পরে, কোনো এক শান্ত শীত ভোরে দূর থেকে ভেসে আসে খেজুর পাতার ঘ্রাণ  রংয়ের আকাশে ভেসে মেঘ একটুকু বয়ে নেওয়া রঙিন আবেগ। আমরা ভাবতে থাকি টিনের চালের নিচে শুয়ে কত বাস ট্রাম চলে,আর কত দূর দৌড়ালে  আমাদের কাছে এসে সময় ক্ষমা চেয়ে নেবে আর কত গল্প বলে,কত সব কবিতা লেখা হলে মানুষ ভেবে নেবে সফল জীবন কত দিন, কত সন্ধ্যা পাখির ডাকের থেকে আকাশ দেখে,নিরবে নদীর পারে নদীর ঢেউয়ের সাথে কত কথা বলা হলে পরে আমাদের বন্ধু হবে,আমরা হবো বন্ধু নদী কিংবা ঘাসের  কত দিন কথা হয় ওই নীল পাখিদের সাথে।

চতুরঙ্গ : একটি চৌমুখী পর্যালোচনা!

চতুরঙ্গ উপন্যাসের মূল চরিত্র চারটি। চারটি বিশেষ কাহিনী একত্রিত করেই, একই সুতোর টানে আবর্তিত হয়েছে শ্রীবিলাসের জবানীতে। তারপরও শচীশ না শ্রীবিলাস কাকে প্রধান চরিত্র বলবো তা নিয়ে দ্বন্ধ থেকেই যায়।  জ্যাঠামশাই জগমোহন এর নাস্তিকতার আড়ালে নির্লোভ জন সেবা করা মানবধর্মের সুন্দর পরিচয় বহন করে। জগমোহন থেকে সে মহান গুন পরিচালিত হয়েছে শ্রীবিলাসের দিকে। তৎকালীন সমাজ ব্যাবস্থায় স্রোতের বিপরীতে চলা এরকম চরিত্র সৃষ্টি করা কখনোই সহজ কাজ ছিলো না।নারীজীবননের নানা দ্বন্দ্ব সংঘাত সুচারুরূপে উঠে এসেছে দামিনীর মধ্যে। দামিনীর ভালোবাসা শচীশ আর শ্রীবিলাসের জীবনে নিয়ে এসেছে শীতলতা।যদিও ভালোবাসার স্রোত সর্বদাই শচীশের দিকেই প্রবাহিত হয়েছে। এমনকি শ্রীবিলাসের সাথে বিবাহের পরও সে শচীশের প্রতি নিবেদিতপ্রান। শচীশের জীবিকার চিন্তাও সেই করেছে।কিন্তু মৃত্যুর পূর্ব মূহুর্তে শেষ আকুতিটুকু শ্রীবিলাসের  প্রতিই ছিলো "সাধ মিটিল না, জন্মান্তরে আবার যেন তোমাকে পাই "। দামিনী শক্তভাবে অবহেলা করে গেছে লীলানন্দস্বামীর ধর্ম, কর্ম, প্রেম আর আধ্যাত্মিকতা।  চারটি চরিত্রকে আলাদাভাবে বর্ননা করেও, তাদের স্বকীয়তা ধরে রেখেছেন সমানভা

জাহাজের পটভূমিতে

সকালের কোলাহল শুরু হতে, শুরুর সূর্যের আলো যেইমাত্র জানালা দিয়ে ঘরে প্রবেশ করে তখন আর কে এলিয়ে থাকে গা বিছানার পরে? অতএব, চমৎকার একটা দিনের শুরু শুরু আরো কিছুকাল উদ্দেশ্যেহীন বেচে থাকা কি করে কাটবে এই নিরাশ সময়,সব এলোমেলো ভেবে। ঘর থেকে বের হয়ে একটি পাখিকে ডেকে যেতে দেখি শুধু গাছের আড়ালে তারপর দিন বেড়ে যায়,মানুষের সব  ক্ষুধা গ্রাস করে মৃত অন্ধকার  দুপুরের নিরবতা সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে যখন সাগরতীরে ভিড়ে যায় পুরোনো জাহাজ নাবিকেরা নেমে পরে বন্দরের কাছে তাদের ও আছে প্রয়োজন আরো কিছুকাল বেচে উপভোগ করা এই সময়ের স্মৃতি  কত দিন কত রাত পরে,ভিড়ে তারা বন্দরের কাছে। বিকেলের আলোতে বসে চায়ের দোকানে সব কথা ভেবে যায় একটি যুবকে সব অন্ধকার কখন নামবে এই পৃথিবীর বুকে, কখন ফিরবে সব পাখিরা নীড়ে,  কখন উঠবে সব তারাদের দল, অন্ধকার ফুড়ে সব শান্ত চারিদিকে, সব কোলাহল শেষে কখন ফিরবে সব ক্লান্ত দেহ বিছানার পরে।